কলোনির মেয়ে
আমি যাদবপুরে থাকি। হ্যাঁ, কলোনিতে। আচ্ছা, কলোনি শুনলেই আপনারা এরকম মুখ ব্যাঁকান কেন বলুন তো? জানেন, আমি যখন কলেজে পড়তাম ক্লাসের কিছু ছেলে মেয়ে আমাকে এড়িয়ে চলত কলোনির মেয়ে বলে। আমরা গরীব বলে যেন ভদ্রলোক হতে পারি না. বইতেও কোনোদিন পড়িনি যে ভদ্রলোক হতে গেলে বড়লোক হতে হয়।ইস্কুলে দিদিমণি অবশ্য বলতেন বার বার যে আমরা গরীব তাই আমাদের অনেক কষ্ট করে ভদ্রলোকের সমান হতে হবে। এটা বোধহয় সত্যিই হবে, বাবাও বলে। আমরা যদিও নিজেদের ভদ্র বলে ভাবি।শত অভাবেও তো কোনোদিন অভদ্রতা করিনি কারুর সাথে।
আমার মা নেই জানেন! বাবা, আমি আর ভাই থাকি। কলোনির অন্যদের থেকে আমাদের ঘরটা একটু আলাদা। আমরা আগে অন্য জায়গায় থাকতাম, ভদ্রলোকদের পাড়ায়। আমি তখন খুব ছোট, আর ভাই হয়নি। ভাল করে মনে নেই। তবে সেই বাড়িতে একটা বারান্দা ছিল, আমি সেখানে থেবড়ে বসে খেলনা গাড়ি নিয়ে খেলতাম আর রাস্তা দিয়ে যাওয়া সব লোককে টাটা করতাম। এইটুকুই আবছা মনে আছে। তখন মা বেঁচে ছিল। বাবা ইস্কুলে পড়াত। আমরাও এত গরীব ছিলাম না বোধহয়। তারপর কী হয় ঠিক মনে নেই। সেই বাড়ি ছেড়ে আমরা এই কলোনি তে উঠে আসি। ভাই এখানেই জন্মেছে, মা’ও এখানেই মারা গেছে। আমার তখন বছর পাঁচেক বয়েস। ওবাড়ি কেন ছেড়ে এলাম তা নিয়ে বাবা কোনোদিন একটা কথাও বলে না। বলা বারণ আমারও। কয়েক বছর পরে একদিন আমি ইস্কুল থেকে ফিরে দাওয়ায় রোদে বসে আপন মনে ছবি আঁকছি, দেখি কার ছায়া পড়ল। তাকিয়ে দেখি একটা লোক, ও মা, বাবা’র মত দেখতে ঠিক, কিন্তু বাবা নয়। আমি অবাক হয়ে চেয়ে আছি দেখে জিজ্ঞ্যেস করল, “মনা, তোমার বাবার নাম কী?” আমি অবাক হয়ে বললাম। শুনে বলল, “মা বাবা কেউ বাড়ি আছে?” আমি ভাবলাম বাবা’র মত দেখতে লোকটা কী বোকা, জানেও না যে আমার মা নেই।
বেশ কিছুক্ষণ কথা বলার পর জানলাম যে উনি নাকি আমার কাকা। তবে এর বেশি আর কিছু জানার সময় পাইনি। বাবা এসে পড়েছিল। আমিও বড়দের কথার মধ্যে না গিয়ে আবার ছবি আঁকতে লেগেছিলাম। অনেকদিন পর এই ঘটনাটা মনে পড়েছিল। তখন অনেক জেদ করে, অনেকবার বাবাকে খুঁচিয়ে, রাগ করে, কেঁদেকেটে তবে কিছু একটা জানতে পেরেছিলাম। আমার জেদের কাছে হেরে গিয়ে বাবা বলেছিল যে ওই স্ব্প্নের বাড়িটা নাকি আমাদের পৈতৃক বাড়ি। সেখানে দাদু, ঠাকুমা, কাকা আর পিসি থাকত, আমরাও থাকতাম। তারপর ইস্কুলের কী গোলমালে বাবার চাকরি চলে যায় আর আমরা এখানে উঠে আসি। কিন্তু কেন আসি, সেটা আর বাবা বলেনি। আর ভাইকে এগুলো বলতে মানা করেছিল। বোকাটা এখনও জানে যে আমরা এখানকারই লোক। ওই বাড়ির কারুর সাথে বাবা আর সম্পর্কও রাখেনি। কাকাও আর কোনদিন আসেনি।
জন্ম থেকেই কলোনিতে আছে বলে ভাইটাও এদের মতই হয়ে গেছে, জানেন। সারাদিন শুধু ফুটবল পেটায়, পড়াশুনা অনেক চেষ্টা করেও বেশি করাতে পারছি না। মাধ্যমিকটা পাশ করেছে কোনোমতে। এখন আর পড়বে না বলছে। ক’দিন ধরে শুনছি আজকাল নাকি পার্টির কাজ করছে। আমার এতে বেশ ভয় করে কিন্তু। পার্টির ছেলে তো কম দেখলাম না কলোনিতে থেকে। বাচ্চা বাচ্চা ছেলেপিলে সব বন্দুক-টন্দুক নিয়ে ঘোরে। আমি চাই না আমার একটা মাত্র ভাই এরকম হয়ে যাক। কী করা যায় বলুন তো? আগে আমার কাছে টিফিনের জন্য টাকা চাইত, এখন আর চায় না। পার্টি থেকে পায় বোধহয়। বাবা যে ওর জন্য চেষ্টা করে না সেটা বলব না, কিন্তু এখন ভাই বড় হয়ে গেছে বলে বাবাকে আর মানে না। বাবা’ই বা আর কত করবে বলুন? ছোটবেলা থেকে দেখছি ট্যুইশানি করে সারাদিন। তাছাড়া রান্না, ঘরের সব কাজ, ভাই আর আমাকে ইস্কুল পাঠানো, আমাদের পড়া দেখিয়ে দেওয়া, সব একা হাতে করেছে। আমি একটু বড় হয়ে রান্নায় সাহায্য করি। সকালে আমি রান্না করে ইস্কুল বা কলেজ চলে যেতাম, বাবা’র সকাল থেকেই পড়ানো থাকে। তারপর বিকেলে ফিরে বাবা রান্না করত। তখন আমি আবার ট্যুইশানে যেতাম। এখনও যাই। তবে বাবা পড়ায় বাংলা, আর আমি কমার্স। উচ্চ মাধ্যমিকে সায়েন্স পাইনি তা নয়, নম্বর ভালই ছিল আমার। তবে সায়েন্স পড়তে তো টাকা লাগে, প্র্যাক্টিকাল আছে, অনেকগুলো ট্যুইশান নিতে হয়। তাই কমার্সই নিলাম। অঙ্কে আমি বরাবরই ভাল। খুব অসুবিধা হয়নি।
ও হ্যাঁ, এখন আমি চাকরি করি একটা। ভাবছেন বি.কম. (পাস) – এ আবার কী চাকরি হয়? তা ঠিকই। আর কোথাও চাকরি না পেয়ে কী করলাম জানেন? কলোনির অনেকে পরামর্শ দিয়েছিল এটা ওটা নানা কোর্স করতে। ওই কম্প্যুটারের অনেকরকম। তা আমি ওসব কিছুই করিনি। পয়সা কোথায়? অন্য একটা উপায় বেরিয়ে গেল হঠাৎ। আমাদের কলোনির শেষ দিকে – ওই যেখান থেকে একটু বড়লোকদের বাড়িগুলো শুরু হয়েছে – সেখানে একটা বাড়িতে মোটামুটি মুখ চেনা ছিল। ওটাই আমার যাতায়াতের রাস্তা কিনা। ওই বাড়ির মাসিমা ডেকে বললেন ওনারা নাকি জিম খুলেছেন ছাদের ঘরে, তার জন্য ট্রেনার খুঁজে দিতে হবে। আমি একটু ভেবে দেখলাম এই সুযোগ। ছোটবেলা থেকে বাবা যোগব্যায়ামটা শিখিয়েছিল, আমার একটু হাঁপানির ধাত আছে তো। গিয়ে মাসিমাকে সোজা বললাম আমি যোগব্যায়াম (যাকে আজকাল কায়দা করে ‘যোগা’ বলে) জানি। আর ওনাদের মেশিনগুলো যদি একটু দেখিয়ে দেন তাহলে ওগুলোও শেখাতে পারব। হাতিঘোড়া তো আর কিছু নয়। উনি একটু টালবাহানা করছিলেন, মেসোমশাই দেখলাম এক কথায় রাজি হয়ে গেলেন। মেয়েদের জিমে মেয়ে ট্রেনারই দরকার। আর ওনারা খোঁজ নিয়ে দেখলেন আমি কলোনির মাস্টারমশাইয়ের মেয়ে, পড়াশোনাও জানি। সামলে নিতে পারব।
জয় মা বলে লেগে পড়লাম। এই সবে ছ’মাস হয়েছে। পয়সাকড়ি মন্দ দেয় না, তবে মাসিমা একটু খিটখিটে আছে। আর ওনার মেয়েটা একটা মাল। আমার নাম ‘সঞ্চিতা’ শুনে কিরকম নাক সিঁটকে তাকিয়েছিল। যেন কলোনির মেয়ের নাম এরকম হতে পারে না। আরে আমার বাবা বাংলা মাস্টারমশাই, রবীন্দ্রনাথ-নজরুল গুলে খেয়ে তবে আমার নাম রেখেছিল। ভাইয়ের নামটাও অন্যরকম। কলোনির মন্টা, বিলু, পচাদের মধ্যে ওর নাম অনিরুদ্ধ শুনে অনেকেই চমকে তাকায়। যেন এখানে থাকতে গেলে ওরকম বিচ্ছিরি বিচ্ছিরি নাম না হলে চলবে না। যাই হোক, আমার ডিউটি তিনদিন সকালে, তিনদিন বিকেলে। রোববারটা ছুটি। বাকি দিনগুলোয় অফ টাইমে ট্যুইশানি চালিয়ে যাচ্ছি। এই জিমে একটু এক্সপিরিয়েন্স করে আরেকটা বড় কোথাও চাকরি পেলে বাবাকে ট্যুইশানি থেকে একেবারে রেহাই দেব। ভাল হবে না, বলুন? সারাজীবন তো খেটে গেল একা একা।
যা বলছিলাম, আসল ঘটনাটাই তো বলা হয়নি দেখুন। তখন থেকে নিজের গান গেয়ে যাচ্ছি। ঘটনাটা এই জিম নিয়েই। এখানে এতরকম মেয়ে আসে, আমার বেশ ভালো লাগে দেখতে, জানেন। কতরকম লোক দেখা যায় – মেয়েরা, তাদের মায়েরা, কাউকে বাবা-দাদা পৌঁছে দিতে আসে, আবার কাউকে বয়ফ্রেন্ডরা নিতে আসে মোটরসাইকেলে চেপে। কেউ রোগা, কেউ মোটা, কেউ ভীষণ মোটা, কেউ লম্বা – অনেক বয়স্ক মাসিমা-কাকিমারাও অসে। আমি জানতামই না যে বাঙালী ঘরের মাসিমারা জিমে যেতে পারে। প্রথম ক’দিন একটু হাসি পেয়ে গেছিল, যারা কোনোদিন শাড়ি ছাড়া কিছু পরেনি তাদের ট্র্যাকস্যুট পরে দেখে অস্বস্তি হচ্ছিল । তবে ভালো লাগে যে এনারা নিজেদের খেয়াল রাখছেন। আমাদের কলোনির মা-কাকিমারা সারাজীবন দিনরাত শুধু খেটে গেল সংসারের জন্য। এখন সবার ঘরে ঘরে টিভি হয়ে সন্ধ্যাবেলা সিরিয়ালটুকু দেখতে পায়। আমি তো বলব ভালোই হয়েছে। এর ওর বাড়ি গিয়ে কূটকচালের থেকে ঘরে বসে সিরিয়াল দেখা ভাল।
জিমে আসা মেয়েদের মধ্যে তানিয়াদিকে আমার সবচেয়ে ভাল লাগে। এমনিতে আমি চিরকালই কম কথা বলি। সবার সাথে বলি ও না। যার জন্যে কলোনির মেয়েরা আমাকে ডাঁটিয়াল বলে পেছনে। কিন্তু তানিয়াদি’র সাথে কী সহজে ভাব হয়ে গেল। আর কয়েকটা বড়লোকের মেয়ের মত হামবড়া নয়। দিব্যি হেসে কথা বলে। সবার কথা শোনে। কারুর পেছনে নিন্দা করে না, যেটা বোধহয় বাকি আর সবাই করে, জিমের মাসিমাও। আমি সবার সাথেই গম্ভীর থাকি, মাসিমার সাথেও। নইলে আমার উপর ছড়ি ঘোরাবে। সব মেয়েরা বলে সঞ্চিতাদি কী রাগী। ভাবুক, আমার বয়ে গেল। কোন মেয়ে কী করল, কার সাথে ঘুরল, এই সব কথাবার্তা আমার ভালো লাগে না। কি জানি, আমার মা নেই বলেই হয়তো আমি এত মেয়েলি নই। তাই হবে, বলুন? এই জন্যেই তানিয়াদিকে এত ভাল লাগে। আসে, নিজের মত এক্সারসাইজ করে, কী কী ভুল হচ্ছে আমার থেকে জেনে নেয়, চলে যায়। মাঝে ক’দিন আসেনি বলে চিন্তা হচ্ছিল। তবে আমার কাছে তো ওর ফোন নম্বর নেই। আর কাউকে জিজ্ঞ্যেস করিনি। আমার ফোন নম্বর অবশ্য সবার কাছে দেওয়া থাকে। ট্যুইশানের টাকা জমিয়ে একটা মোবাইল কিনেছি। মাসিমা বলেছে, সব মেম্বারদের কাছে ট্রেনারের নম্বর থাকতে হবে। ওটাই নিয়ম। যাইহোক, তানিয়াদি কালকে এসে বললো ওর বাচ্চা হবে, তাই জিম ছেড়ে দিচ্ছে। এবার থেকে ডাক্তার যেরকম বলেছে সেরকম এক্সারসাইজ করবে ঘরে বসে।
এখানে একটা মেয়ে আসে, সে নাকি টিভি সিরিয়ালে কাজ করে, নাম রিমা। আমি অবশ্য চিনি না, সিরিয়াল-টিরিয়াল দেখি না। বাকিরা বলাবলি করে। মেয়েটাকে দেখে আমার কেমন জানি মনে হয় টিভিতে অ্যাক্টিং ছাড়া ও আরো অনেক কিছু করে। চোখমুখ কিরকম যেন একটা। বাজে মত। ওই খবরের কাগজে প্রায় দেয় না, সিনেমায় চান্স পেতে গেলে নাকি মেয়দের অনেক কিছু করতে হয়। এই রিমাকে দেখে মনে হয়, সেরকম কিছু করতে হলে ওর আটকাবে না। বাকি মেয়েরা পেছনে ওকে প্রস বলে। তবে ফিগারটা খুব ভাল মেনটেন করে। ওর দিকে ওইজন্য আমাকে একটু বেশি নজর দিতে হয়, মাসিমা বলে রেখেছে। কারণ ও যদি কোনদিন বিখ্যাত হয়, তাহলে হয়তো ইন্টারভিউতে বলবে এই জিমের নাম। মানুষের কত আশা !
এই রিমার সাথে একদিন পাপিয়ার ঝগড়া লেগে গেল। পাপিয়া আমাদের কলোনিরই মেয়ে। মুখ চিনি, আলাপ নেই। ওরাও সবার মত গরীবই ছিল এতদিন। গত বছর থেকে ওদের বেশ পয়সা হয়েছে। উঠোনটা পাকা করে আরেকটা ঘর তুলেছে, কালার টিভি কিনেছে। ওর দাদা আগে থেকেই পার্টি করত। গত বছর ইলেকশনের পর বোধহয় ছোটখাটো নেতা হয়ে গেছে। তাই এত পয়সা, বোনকে জিমে পাঠাচ্ছে। কলোনি থেকে উঠে অন্য কোথাও বাড়ীও করবে হয়তো। পাপিয়া মেয়েটা খুব মোটাসোটা। মানে খুবই মোটা আরকি। ওকে জিম করিয়ে রোগা করা আমার সাধ্য না। তাছাড়া বড্ড ফাঁকিবাজ। ও এখানে আসে অন্য মেয়েদের সাথে আড্ডা মারতে। কোনোমতে একটু মেশিন করে রেস্ট নেয় বসে বসে। এরকম করলে শরীর ঝরবে নাকি? আমি অনেকবার বলেছি মিষ্টিমুখে, পাত্তা দেয়নি। আসলে ও আমার উপর খুব রেগে আছে। ক’দিন আগে ওর দাদার সাথে আমার বিয়ের সম্বন্ধ করেছিল। আমি সোজা না করে দিয়েছি। এখন বিয়ে-টিয়ে করার সময় নেই আমার। রোজগার করে সংসারটাকে আগে দাঁড় করাই, বাবাকে রেস্ট দি, ভাই ঠিকঠাক করুক কিছু, তারপর দেখা যাবে। আর এই কলোনির মধ্যে আমি বিয়ে করার মত কাউকে পাইনি। এখানে করবো না। তা পাপিয়াকে না করেছি বলে তারপর থেকে আমার ওপর রেগে আছে। শুনেছি আমার নামে সবাইকে নাকি আজে বাজে কথা বলে বেড়ায়। বলুক গে, আমার কিছু এসে যায় না।
হ্যাঁ, যা বলছিলাম। রিমা’র সাথে পাপিয়ার একদিন ঝগড়া লাগল। কারণটা শুনলে মনে হবে দুজনেই নার্সারির বাচ্চা বোধহয়। পাপিয়া একটা ট্রেডমিলে দু’মিনিট মত দৌড়ে ওখানেই দাঁড়িয়ে রেস্ট নিচ্ছিল অনেকক্ষণ। আর কোনো মেশিন খালি ছিল না। রিমা ওকে এসে বলেছে হয়ে গেলে নেমে যেতে, কারণ ওর তাড়া আছে। ব্যাস, ঝগড়া শুরু। কে ঠিক বলেছে, কে ভুল বলেছে, রিমা’র তাড়াটা বেশি জরুরি না পাপিয়া’র রেস্ট নেওয়াটা, সেই নিয়ে কী চিল্লামিল্লি ভাবতে পারবেন না। দু’জনে প্রায় মারপিট করে আর কি। আমি কিছু না বলে সোজা মাসিমাকে ডেকে আনলাম। উনি ধমক দিতে তবে দুজন চুপ করল। তারপর থেকে দু’জনের মুখ দেখাদেখি, কথা, সব বন্ধ। রিমা চুপচাপ নিজের মত আসে যায়, পাপিয়া ওর পেছনে সবার কাছে যা তা বলে বেড়ায়। কী বোকা বোকা ব্যাপার। এই হল এদের মুশকিল জানেন। এমনি এমনি লোকে কলোনির নিন্দা করে না। কোনো বড় জিম হলে সেখানে কেউ এরকম ঝগড়া করতই না। এখানে লোকের খেয়ে কাজ নেই, গায়ে পড়ে ঝগড়া করে। আমার মাঝে মাঝে আর ভাল লাগে না। অন্য কোথাও চান্স পেলেই চলে যাব। সব মেয়েদের জিমেই কি এরকম হয়?
এই রে, আমাকে এবার কাজে যেতে হবে। কত কথা বলে ফেললাম দেখুন এইটুকু সময়ের মধ্যে। আপনারা জানতে চাইছিলেন না, একটা সাধারণ কলোনির মেয়ের জীবন কিরকম? তবে আমি রিমাও হতে চাই না, পাপিয়াও না। আমি সঞ্চিতা। নিজের মতই হতে চাই। একদিন হয়ে দেখাব দেখবেন, তখন আবার ইন্টারভিউ নিতে আসবেন তো?
* এই গল্পটি eবংonline.com -এর ডিসেম্বর ২০১১ সংখ্যায় প্রকাশিত *
Pratik
August 21, 2013 at 1:45 AM
Onyorokom chotogolpo…. bhalo! Unexpected ending
Muhammad Shakhawat Hossain
February 27, 2014 at 6:03 PM
ভালো লাগলো অনেক 🙂 পর্যবেক্ষণ গুলো খুব মোক্ষম! চালিয়ে যান 😀
Meghpeon
June 25, 2014 at 6:24 PM
ami notun tomar blog pora shuru korechi…besh lagche..jhor jhorey bangla lekha 🙂 likhte thako