এই সমালোচনা লেখার জন্য কেউ আমাকে একটাও টাকা/ডলার/পাউন্ড/বিটকয়েন দেয়নি। সিনেমা বোদ্ধা/আঁতেল নই, শুধুমাত্র দর্শক হিসেবে বক্তব্য রাখছি।
ডিটেলঃ
ভাষা – বাংলা, রিলিজ তারিখ – ১৪ই এপ্রিল ২০১৭, দৈর্ঘ্য – দু ঘন্টা ৯ মিনিট, ছবি – রঙীন, সঙ্গীত – কালিকাপ্রসাদ ভট্টাচার্য্য, গল্প/চিত্রনাট্য/পরিচালনা – কৌশিক গাঙ্গুলী, অভিনয়ে – জয়া আহসান, কৌশিক গাঙ্গুলী, আবীর চট্টোপাধ্যায়, লামা, কমলিকা।
আলোচনাঃ
অন্য একটি ছবির সমালোচনাতে লিখছিলাম যে আজকাল বাংলায় মৌলিক ছবি খুবই কম হচ্ছে। এই ধারণাটাকে যে কৌশিক গাঙ্গুলী বার বার ভুল প্রমাণ করেন তার জন্যে অনেক অভিনন্দন ওঁর প্রাপ্য। কেয়ার অফ স্যার, খাদ, অপুর পাঁচালী, শব্দ – ওঁর পরিচালিত এই কটি ছবি মৌলিক এবং আমার বেশ প্রিয়। অল্প একটু দ্বিধা নিয়েই বলতে পারি যে এই লিস্টে এবার বিসর্জনও জায়গা করে নেবে। ব্যক্তিগত দ্বিধার কারণটুকু বাদ দিলে জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত বিসর্জন বেশ ভাল একটি ছবি।
দুই বাংলার সীমা ধরে চলতে শুরু করলে যে জায়গায় দুইয়ে মিলে এখনও এক হয়ে যায় বছরের একটা দিন – বিজয়া দশমীতে – সেটা টাকি-হাসনাবাদ-বসিরহাট সংলগ্ন ইছামতী নদী। যেহেতু আমার বাড়ি বসিরহাটে, ছোটবেলা থেকে অপেক্ষায় থাকতাম ওই একটা দিনের জন্যে, যখন নদীর পাড়ে দাঁড়িয়ে বাড়ির সবার সঙ্গে বিসর্জন দেখতে পাব। দু-একবার নৌকোতেও চড়েছি বায়না করে, যদি পাশের নৌকো পাস করার সময়ে বাংলাদেশের পতাকাটা পরিষ্কার দেখতে পাই, মানুষগুলোকে একবার ছুঁতে পারি হাত বাড়িয়ে। তা সে ভীড়ে সেসব খুব একটা হয়নি। বাড়ির লোকেও ভীড়ের ভয়ে নৌকোয় চড়তে দেয়নি তারপর। কিন্তু প্রতিবার পাড়ে দাঁড়িয়ে গুণতাম বাংলাদেশের কটা ঠাকুর দেখতে পেলাম। মাঝনদীতে পতাকারা এক সময়ে মিশেও যেত, আর জলে পড়ার পরে সব ঠাকুরই এক। এই ভাবনাটাকেই কৌশিক গাঙ্গুলী সুন্দরভাবে তুলে এনেছেন বিসর্জনে।