আজ দোল। বসন্ত তো নেই বললেই হয়, এখন দোলও আসে গরমে। প্রায় তিনশো বছর আগে শুরু হওয়া একটি বিখ্যাত দোলযাত্রার গল্প শোনাই। ফাল্গুন মাসের পূর্ণিমায় গোটা বঙ্গদেশে কয়েকটি এলাকার দোলের মেলার জগতজুড়ে নাম, যেমন – রাজশাহীর ভবানীপুরের রাসমেলা, পটুয়াখালীর কুয়াকাটার রাসমেলা, সাতক্ষীরা জেলার মুন্সীগঞ্জ ও কাটুনিয়া রাজবাড়ির দোলপূর্ণিমার মেলা, পশ্চিমবঙ্গের কৃষ্ণনগর ও কালনার রাসমেলা তিনশো বছরেরও পুরনো। এর মধ্যে কাটুনিয়া রাজবাড়ির এক সদস্যের সাক্ষাৎকার নিতে পেরেছি, যিনি আজ থেকে গোটা ষাটেক বছর আগে এই মেলা এবং পুজো চাক্ষুষ দেখেছেন বেশ কয়েকবার তাঁর ছোটবেলায়। শুনে নিই তাঁরই জবানীতে, পঞ্চাশের দশকে কাটুনিয়া রাজবাড়ির বিখ্যাত দোলপূর্ণিমা মেলা কেমন হত।
——————-
কাটুনিয়া রাজবাড়ির কুলদেবতা ছিলেন গোবিন্দদেব (এবং রাধারানী)। দোলের আগের দিন তাঁর অভিষেক হত। বিরাট একটা পরাত ছিল, সেই পরাতের মধ্যেই ডাবের জল, দুধ আর ঘি রাখা থাকত। সেই পরাতের মধ্যে বসিয়ে প্রথমে ডাবের জল দিয়ে স্নান করিয়ে গা মুছিয়ে দেওয়া হত, তারপর দুধ এবং ঘি দিয়ে একইভাবে স্নান করিয়ে মুছিয়ে দেওয়া হত। স্নানধারায় গড়িয়ে পড়া এই তিনটে পদার্থ মিশিয়ে পরে চরণামৃত তৈরি হত। এই অভিষেক হত মন্দিরের বাইরের বারান্দায় ঠাকুর বসিয়ে। এরপরে ঠাকুর আবার ঘরে ফিরে যেতেন, রোজকার নিয়মে ভোগ-শয়ান ইত্যাদি হত, তবে দোলের আগের দিন একটা স্পেশাল ভোগ হত। সন্ধ্যেবেলা আরতি এবং ঠাকুরকে নতুন জামাকাপড় পরানো হত।