
দৃশ্য একঃ
রাত নটা। ক্লোজ আপে একটি মেয়ে, লম্বা দোহারা শ্যামলা চেহারা। পরণে হালকা টপ আর জিনস, গলায় একটা পাতলা স্কার্ফ জড়ানো, কাঁধে মোটামুটি ঢাউস একটা ব্যাগ। কর্পোরেট অফিসের হিমঘর থেকে বেরিয়ে করিডরের লকার রুমের দিকে হাঁটা দিল। ব্যাগ খুলে চাবি খোঁজার মত সময় নেই তার, নিজের কিউবিক্ল থেকে চাবিটা বের করে হাতে নিয়ে রেডি হয়ে বেরিয়েছে সে। জেলের কয়েদির মত সংখ্যাযুক্ত নিজের লকার খুলে সে অমূল্য জিনিসটি বের করল – স্মার্টফোন। তার কাজের ধরণটাই এমন যে সারাদিন ফোনের থেকে বিচ্ছিন্ন থাকতে হয়। এদিকে…গত দশ ঘন্টায় কে কে পিং করেছে কে জানে।
ফোনের স্ক্রিনের ক্লোজ আপ। Whatsapp নোটিফিকেশন ১০৯ , মিসড কল ৩, Twitter আইকনে ২১টা নোটিফিকেশন।
মেয়েটিঃ উফফ, এই স্কুলের গ্রুপের জনতা আবার পাগল হয়ে গেছে মনে হয় আজকে। কী করে যে এত সময় পায় কে জানে! আমি শালা এদিকে অফিস মারাচ্ছি সারাদিন।
একটি দীর্ঘশ্বাস ফেলে ফোনটা মুঠোয় নিয়ে সে অফিসের বাইরে এল। রিস্টওয়াচে সময়টা দেখল নটা পনেরো। নির্দিষ্ট ক্যাবটি এলে আরো কয়েকজনের সঙ্গে সে খাঁচায় ঢুকে পড়ল। মিনিট পঁচিশের যাত্রার পুরোটাই লাগল তার সব মেসেজ পড়ে ফেলতে। সবগুলোর উত্তর দেওয়া হল না অবশ্য অত কম সময়ে। বাড়ি ঢুকেই সে কাঁধের ঢাউস ব্যাগটা ছুঁড়ে সোফার ওপর ফেলল। ক্যামেরা একটু ঘুরবে সুদৃশ্য ফার্নিশড ফ্ল্যাটের ভেতর। লং এবং ক্লোজ শটে দেখা যাবে মেয়েটির সঙ্গে আরো দুটি মেয়ে থাকে। একজন তার নিজের ঘরে বিছানায় উপুড় হয়ে শুয়ে, সামনে ল্যাপটপ। আরেকজন লিভিং রুমে সোফায় বসে হাঁ করে টিভি দেখছে, হিন্দি সিরিয়াল।
মেয়েটি নিজের কোটরে ঢুকে পড়ল। এরপরে কয়েকটি ফ্রেম আলাদা আলাদা দেখা যাবে – তিনটি মেয়ে যে যার ঘরে খাবার বেড়ে নিয়ে খাচ্ছে, রান্নাঘরটা মোটামুটি গোছানো, তৃতীয় মেয়েটি খেয়ে উঠে আবার সিরিয়াল দেখছে, দ্বিতীয় মেয়েটি খাবার পর বাকিদের গুডনাইট বলে ঘরের দরজা বন্ধ করে দিল, সে এখন তার বয়ফ্রেন্ডের সঙ্গে ভিডিও চ্যাট করবে। বয়ফ্রেন্ডের চেহারাটা আমরা এক ঝলক দেখব মেয়েটির ল্যাপটপের স্ক্রিনে, হালকা মোটকা মাঝারি দেখতে একটি দক্ষিণী ছেলে। সে স্ক্রিন থেকে হাতমুখ নেড়ে এদের হাই হেলো করবে।